চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার-নিমপাতার গুনাগুন ও উপকারিতা

নিম পাতা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।এর মধ্যে রয়েছে অনেক ওষুধি গুন।নিম পাতা ডাল,পাতা,রস সবগুলো কাজে লাগে।প্রায় পাচ হাজার বছর ধরে এটা বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশে নিম গাছ ওষুধি গাছ হিসাবে নিমের গাছ ব্যবহার করে আসছে ।

ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত নিম পাতার রস খেলে ডায়াবেটিস থেকে উপশম পাওয়া যায়।নিম পাতার রস খাওয়ার ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে।আয়ুবেদী চিকিৎসক এর মতে নিম গাছের অনেক গুন।বহুদিন ধরে রুপচার্চা সহ নানা কাজে নিম পাতা ব্যবহার করা হয়।ত্বকের কালো দাগ থেকে মুক্তি।

সূচিপএ:চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার

ত্বকের উজ্জ্বলতায় নিম পাতা

নিম একটি ওষুধি গাছ।যার ডাল,পাতা,রস সবই কাজে লাগে।ভাইরাস,ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ কারক হিসাবে নিম পাতা বেশ কার্যকর।রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি এর জুড়ি মেলা ভার।দেওয়া জন্য নিম পাতা অন্যান্য সহায়ক। এছাড়া ও ত্বকে ময়েশ্চারাইজার হিসাবে কাজ করে।সাধারণত খাবারের পর নিম পাতার রস সেবন করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃকলমি শাক খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

নিমের পেষ্ট তৈরি করে ব্যবহার মাধ্যমে উকুনের সমস্যা দূর করা যায়।আবার নিম পাতার রস রক্ত পরিষ্কার করে ও রক্তে শর্করা মাএা কমায়।নিম পাতা অ্যালর্জির সমস্যা,একজিমা,ফোড়া অথবা বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা নিরাময়ে নিম খুব কার্য়কর।

ত্বকের জন্য নিম পাতা

ত্বকঃবহুদিন ধরে রুপচার্চায় নিমের ব্যবহার হয়ে আসছে।ত্বকের দাগ দূর করতে নিম খুব ভালো কাজ করে।এছাড়াও এটি ত্বকের ময়েশ্চারাইজার  হিসাবে ও কাজ করে।ব্রণ দূর করতে নিম পাতা বেটে লাগাতে পারেন।মাথার ত্বকে অনেক জানে চুলনাকি হয়।নিম পাতা ও কাচা হলুদ একসাথে মিশিয়ে লাগালে চুলের গোড়া শক্ত ও চুলনাকি রোধ হয়।নিয়মিত নিম পাতা ও কাচা হলুদ একসাথে পেষ্ট করে লাগলে ত্বক সুন্দর ও ত্বক টান টান হয়।


চুলঃউজ্জ্বল, সুন্দর,দৃষ্টিনন্দন চুল পেতে নিম পাতার ব্যবহার বেশ কার্যকর।চুলের খুসকি দূর করতে চুলে শ্যাম্পু করার পর নিম পাতার সিন্ধ পানি দিয়ে চুল ভালো ভাবে মেসেজ করতে হবে।এটা কয়েকদিন ব্যবহার করলে খুসকি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।চুলের জন্য নিম পাতার ব্যবহার অদ্বিতীয়। সপ্তাহে একদিন নিম পাতা বেটে মাথা লাগিয়ে ১ঘন্টা রেখে পরে ধুয়ে ফেলতে হবে।এটা করলে চুল পড়া কমায় পাশাপাশি এটা চুল নরম ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

ত্বকের ইনফেকশন দূর করতেঃ নিম পাতায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়ার,অ্যান্টিফাংগাল থাকার ফলে ত্বকের ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে।এর প্রয়োজন কয়েকটি নিম পাতা নরম হওয়া পযন্ত সিদ্ধ করতে হবে।এরপর পানি ছেকে স্নানের পানির সাথে মিশিয়ে ফেলুন।প্রতিদিন এই ভাবে স্নান করলে আপনার ত্বক এবং চুলের জন্য অতি উওম।

শুষ্ক ত্বকের যত্নেঃনিম পাতা ত্বকে নরম ও কোমল হতে সাহায়্য করে।অল্প পরিমাণ নিম পাতার গুড়ো নিয়ে এতে কয়েক ফোটা জলপাই তেল যোগ করুন।এটি পুরো ত্বকে মাখুন এর পর পানি ধুয়ে ফেলুন।সপ্তাহে একবার দুইবার করলে আপনার শুষ্ক ত্বক থেকে মুক্তি মেলবে।

মুখ বা ত্বকের ছোট ছোট গর্ত কমাতেঃআমাদের প্রত্যেক এর এই সমস্যাই ফেস করতে হয়। এর জন্য আমরা নানান রকমের কসমেটিক ব্যবহার করে থাকি।কিন্ত হাতের কাছে সেই ওষুধ আছে।নিম পাতা গুড়ো ও কমলালেবুর খোসার গুড়ো মিশাতে হবে।এই দুই মিশ্রন যোগ করার পর পরিমাণ মতো দুধ, মধু, টক দই দিয়ে মিশাণ।সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন ব্যবহার করলে মুখের ছোট ছোট গর্ত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।এবং মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায।

নিম পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা 

আমাদের অতি পরিচিত একটি গুন সম্পন্ন ওষুধি গাছ হচ্ছে নিম গাছ।এটি বহুবর্ষজীবী ও চিরহরিৎ  জাতীয় বৃক্ষ। বয়স্ক লোক বলতো নিম গাছের সবকিছু ব্যবহার করা যায়।প্রচীন ভারতীয় উপমহাদেশে এটি পাচ হাজার বছর ধরে ওষুধি গাছ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।নিম গাছে ১৩০ ধরনের ওষুধ তৈরি করা হয়।সাম্প্রতিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিম গাছ কে একুশ শতকের বৃক্ষ বলে ঘোষণা করেছে।

স্বাস্থ্য উপাকারিতা

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃনিম পাতা রোগ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে শেষ কার্যকর।এটির মধ্যে প্রচুর মাএায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান থাকে।প্রতিদিন কয়েক টি নিম পাতা গুড়ো করে এক গ্লাস পানির সাথে পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

ওজন কমায়ঃনিমের ফুলে ওজন কামাতে অসাধারণ সক্ষমতা রয়েছে।এটি শরীলের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে অতিরিক্ত চর্বি দূর করতে সাহায্য করে।বিশেষ করে তলপেটের চর্বি কমাতে বেশ কার্যকর।এক মুঠো নিম ফুল আর ১ চা চামুচ মধু ও আধা চামুচ লেবুর সাথে মিশিয়ে সেবন করতে হবে।প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই রস খেলে ওজন কম হয়।

ভাইরাস প্রতিরোধ করেঃনিম পাতা বা নিম পাতার রস বিভিন্ন ভাইরাস থেকে রক্ষা করে।প্রাচীন কালে হার্ম,চিকেন পক্স,চর্মরোগ হলে নিম পাতার বাটা লাগলে এসব ভাইরাস থেকে উপশম পাওয়া যায়। নিম পাতা সিদ্ধ করে গায়ে দিলে চুলকানি ও ত্বকের জালাপোড়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

খুশকি দূর করেঃআমরা কম বেশি সবাই মাথায় খুশকি বা ড্যানড্রপ নিয়ে চিন্তায় থাকি।তবে সঠিক নিয়মে যদি নিম পাতা ব্যবহার করা যায় তাহলে এই সমস্যা থেকে উপশম পাওয়া যায়।নিমে থাকা ছএাকনাশক ও ব্যাকটেরিয়া  খুশকি দূর করতে সহায়তা করে।খুশকি দূর করতে এক মুঠো নিম পাতা নিয়ে গরম করতে হবে যতক্ষন পানি সবুজ রং ধারণ করে।এর পর পানি পরিষ্কার করে মাথায় দিতে হবে।এভাবে কয়েকদিন ব্যবহার করলে চিরতরে খুশকি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ  করতে নিম পাতা বেশ কার্য়কর।নিম পাতা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে।প্রতিদিন সকালে ১০ টা গোলমরিচ ও নিম পাতা বেটে খাইলে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি মেলে।এটা রক্ত নালি প্রসারিত করে এবং রক্ত সরবরাহ নালি উন্নত করে।

উকুন দূর করেঃনিমের ব্যবহার উকুন দূর হয়।সপ্তাহে তিনবার দুই মাস নিমের পেস্ট বানিয়ে মাথায় রাখুন, এরপর মাথায় শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন এবং উকুনের চিরুনি দিয়ে মাথায় আচরান।এতে উকুন দূর হয়।

  আরো পড়ুনঃ অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা 

দাঁত রোগ নিরাময়ঃনিম গাছের ডাল বেশ কার্যকর।নিম গাছের ডাল দিয়ে নিয়মিত দাত মাজলে দাত শক্ত হয়।নিম গাছের ডাল দিয়ে দাত মাজলে দাত এর পাশাপাশি মাড়ি এবং দাতের ছোট খাটো গর্ত ভালো হয়ে যায়।

চর্মরোগ নিরাময় করেঃনিম পাতা ব্রণ,ফোড়া,অ্যাজিমা সহ বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দেই।ত্বকের যেকোনো সমস্যা হলে নিম গাছে পাতা গুড়া করে পেষ্ট বানিয়ে মুখে মেখে রাখলে ত্বকের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এটি চর্মরোগ বা যেকোনো ধরনের চুলনাকি থেকে মুক্তি মেলে। 

চোখের চুলনাকি জন্যঃআমাদের চোখের চুলনাকি জন্য কত কষ্ট করতে হয়।কিন্তু আমাদের কাছে রয়েছে নির্মল উপাদান। নিম পাতা দশ মিনিট সিদ্ধ করে নিতে হবে তারপর ঠান্ডা করে পানও ছেকে নিতে হবে।তারপর সেই পানি দিয়ে চোখে ঝাপটা দিতে হবে।তাহলে চোখের চুলনাকি থেকে উপশম মেলে।

লিভার সমস্যা থেকেঃপ্রতিদিন অল্প পরিমাণ নিম পাতার রস খেতে পারলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য ও লিভার এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।পাশাপাশি এটা রস পরিশোধন করতে ও কাজ করে।শরীল থেকে বিষাক্ত ও ক্ষতিকর উপাদান বের করে দেয়।তাই সুস্থ থাকতে নিম রসের জুড়ি নাই।

এলাজিতে নিম পাতা

এলাজির সঙ্গে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত। এলাজির কারণে যখন- তখন অস্বস্তিতে ভোগেন অনেকেই।এলাজি শুধু চুলনাকি নয়,হাচি- কাশি কিংবা হাঁপানি ও এলাজির মধ্যে পড়ে।এর সমস্যা কত টা ভয়ংকর সেটা যার আছে সেই জানে। এলাজির কারণে অনেকে খাদ্য তালিকা থেকে নিজের প্রিয় খাবার বাদ দেন। যেমন-গরুর মাংস,হাসের ডিম,ইলিশ,চিংডি,পুটি,বোয়াল মাছ,বেগুন,কচু ইত্যাদি খাবার বাদ দিতে হয়। এগুলো খেলে আমাদের শরীলের নানান ধরনের রোগ সমূহ দেখা দেয় কারো গা চুলকায়,চোখ লাল হয়ে যায়,চোখ দিয়ে পানি পড়ে,আবার কারো কারো পায়ে লাল লাল চাকা দেখা দেয়।

চর্মরোগ,হাঁপানি, এলাজি থেকে মুক্তি জন্য আমরা নিয়মিত অনেক ওষুধ ব্যবহার করে থাকি। তবে ওষুধ ছাড়াও এলাজি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নিম পাতার মিশ্রণে এক মাসের মধ্যে সহজ উপায়ে এলাজি থেকে চিরবিদায় করা যায়।নিম পাতার মিশ্রন বানানোর পদ্ধতি এক কেজি নিম পাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর শুকানো নিম পাতা পাটায় পিশে করে একটা কাচের পাএে ভরে রাখুন।

ব্যবহারের পদ্ধতি 

এক চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ নিম পাতার গুড়া এবং এক চা চামুচ ভুষি এক গ্লাস পানিতে আধা ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে রাখুন। আধা ঘন্টা পর চামুচ দিয়ে নেড়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে,দুপুরে ভরা পেটে এবং রাতে শোয়ার আগে নিম পাতার এই মিশ্রন সেবন করতে হবে।তাহলে এলাজি, হাঁপানি, চর্মরোগ থেকে চিরবিদায় করা য়ায়।

চুলের যত্নে নিম পাতা

নিম পাতার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না।এর ওষুধি গুন অনেক। নিম পাতার চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার বেশ কার্যকর। শীত কালে আমাদের কম বেশি সকলেই চুল পড়া নিয়ে সমস্যা পড়ি।এর জন্য অনেক ধরনের প্রোডাক ব্যবহার করি।এবং উপাকারের চেয়ে অপকারিতায় বেশি।

তবে হাতের কাছে নিম পাতা রেখেই আমরা এর ওষুধি গুন সম্পকে জানি না।নিম পাতার গুনাগুন  ও উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না।নিম পাতার ব্যবহার করে চুল পাড়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

  • নিম তেলে একাধিক ফ্যাট অ্যাসিড আছে।আর এই ফ্যাট অ্যাসিড রুক্ষ চুলের হাল ফেরাতে সাহায্য করে।
  • নিম পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে।যা চুলের জেল্লা ফেরায়।চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
  • চুলকে ভিতর থেকে পুষ্টি জোগায়। চুলকে ময়শ্চারাইজ করে তোলে।
  • খুশকির সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
  • নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান।যা স্ক্যাল্পের নানা সংক্রমন সারিয়ে তোলে।

তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার

ত্বক নিয়ে সমস্যায় পড়ে নি এখন ব্যক্তি খুজে পাওয়া যাবে না।ত্বক ভালো রাখতে নিম পাতার ভুমিকা বেশ পুরোনো। নিম পাতা আপনর ত্বকের নানা ধরণের জীবাণুকেই দূর করে না পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসে।তবে শুধু নিম পাতা ব্যবহার করলেই হবে না,এর সঠিক নিয়ম জানতে হবে।তাহলপ আপনি সব ঋতুতে ব্যবহার করতে পারবেন।

  • নিম পাতা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল।তাই খুব সহজে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
  • নিম পাতা ব্যবহারের ফলে ত্বক উজ্জ্বল হয়।
  • ত্বকের দাগ ছাপ দূর করে।
  • নিম পাতা বলিরেখা প্রতিরোধে কার্যকারী  ভূমিকা রাখে।
  • নিম পাতার ফেসপ্যাক

ত্বকের সাধারণ সমস্যা  হোক বা জ্বালাপোড়া হোক বা বড় কোনো ক্ষত সব খানেই নিম পাতা একই ভাবে কার্য়কারী ভুমিকা রাখে।আবার রুক্ষ ত্বক ময়েশ্চারাইজার করতেও সাহায্য করে।

নিম পাতার ফেসপ্যাক তৈরির জন্য প্রথমে পাতা শুকানো করে গুড়া করে নিন।এরপর দুই টেবিল চামচ নিমপাতা গুড়া ও দুই টেবিল চামচ চন্দন পাউডার  দিয়ে মিশ্রিয়ে নিন।এবার এর সঙ্গে সামান্য জল ও এক টেবিল চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে এটি ভালো ভাবে মিশ্রিন করতে হবে।এর পর এটি মুখে বিশ মিনিট লাগিয়ে পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে।এই মাষ্ক ত্বকে স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনবে।

খালি পেটে নিম পাতা ও রসের উপকারিতা 

আয়ুর্বেদিক দৃষ্টিকোণ থেকে নিম পাতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। নিমের পাতা কিতা হলো এর উপরে গুণ অনেক রয়েছ।নিম পাতা রক্তের সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে । ভালো ফল পেতে নিমের কচি পাতার রস প্রতিদিন সকালে খেয়ে খালি পেটে পান করুন। 



খালি পেটে নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা এছাড়া ও ত্বকে ময়েশ্চারাইজার হিসাবে কাজ করে।সাধারণত খাবারের পর নিম পাতার রস সেবন করতে পারেন।নিমের পেষ্ট তৈরি করে ব্যবহার মাধ্যমে উকুনের সমস্যা দূর করা যায়।আবার নিম পাতার রস রক্ত পরিষ্কার করে ও রক্তে শর্করা মাএা কমায়।নিম পাতা অ্যালর্জির সমস্যা,একজিমা,ফোড়া অথবা বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা নিরাময়ে নিম খুব কার্য়কর

রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ : নিম পাতায় বয়েছে অনেক ওষুধি গুন।নিম পাতা আমাদের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ রাখে এবং ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করে।

রক্ত পরিষ্কার রাখে: নিমের এমন ঔষধিগুন রয়েছে যে এটি শরীরের রক্তের সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার করে। এটি রক্তে টক্সিন বের রক্তকে ডিটক্সিফাইন করে। আপনার রক্ত পরিষ্কার থাকলে কোন রোগ হবে না

চর্ম রোগে নিম পাতা

চর্মরোগ এক ধরনের মারাত্মক রোগ।বর্ষার আদ্রতার কারণে চর্মরোগ  সহজেই ছড়ায়।এ ধরনের ত্বকে নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন।তাই বর্ষায় চর্মরোগ এড়াতে চাইলে নিম পাতা ব্যবহার করুন।নিমের রয়েছে প্রচুর গুন।এই গাছের  শিকড় থেকে শুরু করে পাতা,ফুল,বীজ,বাকল,কাঠ সবকিছু ব্যবহার করা যায়।

নিমের ছাল বা নিমের ফল পাতার সাথে ভালো করে পিষে পেষ্ট করুন।যেখানে ত্বক সংক্রান্ত  রোগ বা চুলকানি  বা দাদ আছে যেখানে লাগিয়ে দিন।এটি তৎক্ষনাৎ স্বস্তি দেবে।

পুরনো নিম গাছের শুকানো ছাল তুলে মিহি গুড়ো তৈরি করতে হবে এবং তারপর ৩ গ্রাম পাউডার এক গ্লাস জলে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে।এরপর সকালে মধুর সাথে মিশিয়ে নিবে হবে।এই জল ব্যবহার করলে চর্মরোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

নিম পাতার উপকারিতা

নিম গাছ বেশ উপকারি ওষুধি গাছ।এই গাছে সব অংশ ব্যবহার বা ওষুধি হিসাবে পরিচিত। নিম গাছের ছাল,পাতা,ডাল সবকিছুই ব্যবহার করা হয়।নিম পাতা চোখের রোগ,রক্তাক্ত নাক,কুষ্ঠ রোগ,পেট খারাপ হওয়া, অতিরিক্ত জ্বর থেকে মুক্তি,লিভার, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ জন্য ব্যবহার করা হয়।

নিম পাতার উপকারিতা 

  • নিম গাছ অ্যান্টি-অক্সডেন্ট যুক্ত গাছ।এটাই অ্যান্টি-অক্সডেন্ট থাকায় কারনে নিম পাতা বা নিম গাছ ক্ষতিকর রশ্নি,দূষণ,এবং অন্যান্য ক্ষতিকর ভাইরাস থেকে ত্বক রক্ষা করে।
  • নিমে ভিটামিন ও ফ্যাটি অ্যাডিড ত্বকের স্থিতিস্থাপক উন্নত করে এবং বজায় রাখে,বালি রেখাও কমায় ত্বকের।এটি আপনাকে ও আপনার ত্বককে পুনরুজ্জীবিত ও তরুন করে তোলে।
  • ছএাক,ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের চিকিৎসায় নিম পাতার ব্যবহার করা হয়।এগুলো চিকেন পক্সের  পাশাপাশি হাম,ম্যালেরিয়ার মতো ভয়াবহ রোগ থেকে রক্ষা করে।
  • নিম পাতার গুড়া বা নিম পাতার পেস্ট যদি কোনো আক্রাক্ত স্থানে লাগালে আক্রান্ত স্থান তারাতাড়ি শুকিয়ে বা ব্যাথা কমে যাই।নিম পাতা দিয়ে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে কোনো আক্রান্ত ব্যাক্তি কে স্নান করানো হয় তাহলে সেই ব্যাক্তি তারাতাড়ি সুস্থ হয়ে যায় এবং ব্যাথা করে নিরাময় পাই।
  • নিম পাতা আমাদের হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে।নিম পাতায় শক্তিশালী ক্যালসিয়াম ও খনিজ উপাদান আছে যা আমাদের শরীলের প্রতিদিন হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে।
  • বাড়ির আশেপাশে যদি ক্ষতিকর পোকামাকড় থাকে থাকলে নিম পাতা পুড়িয়ে দিলে ক্ষতিকর পোকামাকড় দূর হয়। নিম পাতা পুড়ালো মশা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • নিম পাতা বিভিন্ন ক্ষতিকর জীবাণু থেকে রক্ষা করে।নিয়মিত নিম পাতার তৈরি বড়ি বা পাতায় গুড়া দিয়ে চা তৈরি করে খেলে আপনার শরীলে কোনো ক্ষতিকর জীবণু প্রবেশ করতে পারবে না
  • দাতের পরিছন্ন ও দাত পরিষ্কার  ও মুজবুত করতে নিমের ডালে গুনাগুন অপরিসীম।নিম গাছের ডাল দিয়ে দাঁত মাঝলে দাতের মাড়ি ও দাত গোড়া শক্ত হয়।
  • নিম গাছের পাতার গুড়া করে পেষ্ট করে মুখে মেখে রাখলে ব্রণ,কালো দাগ ও চোখের নিচের অংশ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

নিম পাতার অপকারিতা

নিম পাতা আমাদের মানব শরীলের জন্য বেশ কার্যকর।এটা অনেক ধরনের রোগ থেকে আমাদের মুক্তি দেই।নিম গাছ আমাদের উপকারে পাশাপাশি অপকার করে থাকে।যেকোনো জিনিসের দুই টা দিক থাকে।একটা ভালো ওপর টা খারাপ।নিম গাছের ও অপকার দিক রয়েছে। সেগুলো জানা থাকলে আমাদের মানব শরীলের জন্য মারাত্মক প্রভাব ফলবে।

নিম পাতার ক্ষতিকার দিক 

  • খালি পেটে বেশিদিন নিম পাতার রস খেলে হীতে বিপরীত হতে পারে। তাই দীর্ঘদিন নিম পাতা খাওয়া উচিত নয়।
  • কারো যদি নিম পাতার রস খাওয়ার পর বমি ভাব,মাথা ব্যাথা ও ডায়রিয়ায় মতো সমস্যা হয়। তাহলে তৎক্ষনাৎ এটা খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।
  • নিম পাতা মাঝে মাঝে বান্ধ্যাত্বতার কারণ হয়ে ওঠে।তাই যারা সন্তান নিতে চাইছেন,তারা নিম পাতা খাওয়া বাদ দেন।
  • যেকোনো অপারেশন করার দুই থেকে তিন সপ্তাহে আগ থেকে নিম পাতা খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
  • গর্ভবতী মায়েদের জন্য নিম পাতা ব্যবহার করা ক্ষতিকর।এটার ব্যবহার এর ফলে গর্ভপাত হতে পারে,তাই গর্ভকালীন অবস্থায় এটা খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
  • যাদের নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা আছে,তাদের নিম পাতা খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
  • দিনে দুইটি নিম পাতা খাওয়া উচিত।এর বেশি খেলে উপাকরের চেয়ে অপকার বেশি।
  • আপনার যদি অ্যালার্জি সমস্যা থাকে তাহলে নিম পাতা পেষ্ট বা নিম পাতার রস মুখে মাখা উচিত নয়।
  • কারো যদি কিডনি, লিভার সমস্যা থাকে তবে চিকিৎসক এর পরামর্শ নিম পাতা ব্যবহার করা উচিত।

শেষকথা

নিম গাছ আমাদের শরীলের বা ওষুধের তৈরি জন্য আশিবাদ সরূপ।এই গাছে পাতা থেকে ডাল পযন্ত আমাদের কাজে আসে।নিম গাছ সেই প্রাচীন কাল থেকে এখন পয়ন্ত আমাদের উপকার করে আসছে।নিম গাছের পাতা আমাদের চর্মরোগ,ত্বক,ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগ থেকে উপশম করে।

নিম গাছের এতো রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয় না।আগারে ভাগারে নিম গাছ হয়ে বসে থাকে। হাতের কাছে এই গাছ পাওয়া যায়।তাই সুস্বাস্থ্যের নিশ্চিতে নিজেদের প্রয়োজন অনুধারন করে নিম পাতা ব্যবহার করুন।আর পরিশেষ, আপনার যদি কোনো বড় ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তার এর পরামর্শ নিম গাছ ব্যবহার করবেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url